নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

মোঃ সেলিম রেজা,
কেশবপুর ,
যশোর।
একসময় ভাইরাসের নাম শুনলে আমাদের শরীরের ভিতর আতঙ্ক সৃষ্টি হতো। ভাইরাস মানবদেহে বিস্তার করলে শরীরের অনেক ক্ষতি সাধিত হয় , ইভেন মৃত্যু ও হতে পারে। মানবদেহে বিস্তার করে শরীরের যেমন অনেক ক্ষতি হয় তদ্রূপ বর্তমান সময়ে শিশু গাছে একরকম ভাইরাসের বিস্তার ঘটছে যাহা মানুষের জন্য ক্ষতি না হয়ে, আশীর্বাদ বয়ে এনেছে। এই ভাইরাসটি স্থানীয়ভাবে কোথাও কোথাও লাল ভাইরাস, লাক্ষা ভাইরাস ও ছত্রাক নামে পরিচিত। যে নামে পরিচিতি পাক না কেন, এই ভাইরাসটি শিশু গাছের ক্ষতি সাধন করছে। যাহা অল্প দিনেই গাছটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। লাক্ষা ভাইরাসটি মানুষের অর্থনৈতিক উপার্জনের বড় মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ক্রান্তি লগ্নে । কাক ডাকা ভোর হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভাইরাস গুলো সংগ্রহের জন্য উচু বিশাল শিশু গাছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আক্রান্ত ডাল গুলি গাছ থেকে পাড়া হয়।
অসাধারণ এক জীবন জীবিকার মাধ্যম।
এই ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত কেশবপুর, কাটাখালি, আজির মোড়ের বাসিন্দা – ফিরোজ গাজীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় কলাগাছি হতে কাটাখালি পর্যন্ত কমপক্ষে ৩০ থেকে ৩৫ টি সেডে লাল ভাইরাস প্রতিদিন লক্ষ্য লক্ষ্য টাকার বেচাকিনা হচ্ছে। কিছুদিন পূর্বে ও ফিরোজ গাজী একজন চাকরিজীবী ছিলেন তিনি জাগরণী চক্রে চাকরি করতেন । বর্তমানে চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিন মাস হচ্ছে এই ভাইরাস ব্যবসার সাথে জড়িত । সদা মিষ্টি ভাষী ফিরোজ গাজী বললেন প্রথমে গাছের মালিকের কাছ থেকে গাছ হিসাবে ৩ হাজার অথবা ৪ হাজার টাকায় ক্রয় করা হয় ।
ঐ গাছ হতে ডাল সংগ্রহের করে মনিরুল , মিন্টু মিয়া । তাদের কাছ থেকে ফিরোজ গাজী, মানিক সরদার আরো অনেকে ২৩৫ টাকা কেজি ধরে ডাল ক্রয় করে । ঐ সকল ডাল আবার গ্রামের গরিব মহিলাদের কাছে ভাইরাস সংগ্রহের জন্য পাঠানো হয় ।এতে করে গরিব মহিলাদের একটা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে। লাক্ষা ভাইরাস সংগ্রহের পর ফ্যানের নিচে শুকানো হয় । শুকনো ভাইরাস কখনো কখনো ২৮ হাজার টাকা মণে বিক্রি হয়। বর্তমানে ওই সকল ছত্রাক ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা মণে বিক্রি হচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ে আরো অনেকে বলেন , ভাইরাস গুলি ইন্ডিয়ায় বিক্রি হচ্ছে এবং এই কাজের সাথে তরুণরাই বেশি সম্পৃক্ত। লাক্ষা ভাইরাস কি কাজে ব্যবহার হয় জানতে চাইলে উনারা বলেন সিঁদুর, আলতা এবং গালা পালিশ এর জন্য এই ভাইরাস ক্রয় করে নিয়ে যায়। ভাইরাস গুলো ভাঙ্গার পর ভিতরে চকচকে লাল বর্ণ দেখা যায়, এবং হাতে নিলে রক্তে বর্ণ ধারণ করে। এগুলি সাধারণত সাতক্ষীরা, বেনাপোল, খুলনা থেকে ক্রেতা এসে নগদ টাকায় ক্রয় করে প্রতিদিন নিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জে এই ভাইরাসের গবেষণা কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
Leave a Reply